দিনাজপুরের কড়াই বিল হতে পারে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র

মোঃ শামীম : ইনফোলিডার, ইউডিসি, বিরল, দিনাজপুর
প্রকাশ কাল : ২০১৭-১০-০৪ ১৮:২৭:২২


দিনাজপুরের কড়াই বিল হতে পারে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র
দিনাজপুরের কড়াই বিল হতে পারে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি দিনাজপুর। এখানে দেখার রয়েছে অনেক কিছুই। ঐতিহাসিক কান্তজিউ মন্দির, রামসাগর, রাজবাড়ি, স্বপ্নপুরীসহ নানা আকর্ষণীয় স্থান বছরের প্রায় সব সময়ই পর্যটকদের আনাগোনায় সরব থাকে। তবে এগুলোর পাশাপাশি দিনাজপুরে আরও একটি মনোমুগ্ধকর স্থান রয়েছে। দিনাজপুর শহর থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে বিরল উপজেলার ওই স্থানটির নাম কড়াই বিল।

ব্যস্ত শহরের কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে এবং গাছ-গাছালি ঘেরা স্ফটিক স্বচ্ছ পানির আকর্ষণে কড়াই বিলে ছুটে যাচ্ছেন অনেক দর্শনার্থী । বিশেষ করে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদ ও দুর্গা পূজার পর পরই সেখানে প্রকৃতি প্রেমিদের আনাগোনা বেড়ে যায়।

দিনাজপুর সদর থেকে বিরল উপজেলা হয়ে সম্পূর্ণ পাকা রাস্তা দিয়ে সেখানে যাওয়া যায়। তাই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বহু মানুষ প্রশান্তির জন্য বা পিকনিক করতে সেখানে ছুটে যান। নয়ন জুড়ানো এই কড়াই বিলে সারা বছরই দর্শনার্থীদের আগমন লক্ষ্য করা যায়। তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসেই সেখানে দর্শনার্থীদের ভিড় হয় বেশি।

বিরল থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে গেলেই রাস্তার ডান পাশে একটি সাইনবোর্ড দেখা যাবে। সাইনবোর্ডের উত্তর পাশে যে ছোট রাস্তা নেমে গেছে সেটি দিয়ে কিছুটা পথ এগোলেই সামনে পড়বে বিশাল গেইট। কড়াই বিলে যাওয়ার প্রবেশ পথ এটি। গেইট দিয়ে ঢোকার পর কিছুক্ষণ হাঁটলেই চোখে পড়বে নয়নাভিরাম কড়াই বিল। বিশাল এই বিলের দু’পাড়ে পাতা বাহারি বিভিন্ন গাছ। এছাড়া রয়েছে টমেটো, কুমড়া, ধনিয়া পাতা ও নানা ধরনের ওষুধি ও ফুলের গাছও। শীত মৌসুমে কড়াই বিল অতিথি পাখিতে ঢেকে যায়। সুদূর সাইবেরিয়া থেকে হাজার হাজার পাখির সমাগম ঘটে এখানে। পাখি দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সেখানে ছুটে যান প্রকৃতি প্রেমিরা। সব মিলিয়ে সৃষ্টি হয় অনিন্দ্যসুন্দর নৈসর্গিক এক পরিবেশ।

কড়াই বিলের আয়তন ২৮ একর ও পাড়ের আয়তন ১৮ একর। বিলের পাড়ে মাঝে মাঝেই রয়েছে সারি সারি টুল ও চেয়ার। এগুলোতে বসে পর্যটকরা বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করেন।

জানা যায়, ১৯৭৪ সালে ১৬ এপ্রিল তৎকালীন সরকার এই বিলটি বিরল থানা মুক্তিযোদ্ধা সমবায় সমিতির নামে রেজিস্ট্রি করে দেয় (রেজি নং-৭৭১)। বর্তমানে সমিতির সদস্য সংখ্যা ১৫০ জন। এই সমিতি কড়াই বিল ও তার আশপাশের এলাকাকে আরও দর্শনীয় করে গড়ে তোলে। সমিতি থেকে বিল পাড়ে লাগানো হয় নানা ধরনের গাছ। বর্তমানে সেখানে শিশু, আকাশমণি, দেশি কড়ই, আমলকি, মেহগনি, আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম, বেলসহ নানা জাতের  প্রায় দেড় হাজার গাছ রয়েছে।

কড়াই বিল সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি ও বিরল মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুল কাশেম অরু জানান, কড়াই বিলকে সরকার আর্থিক সহায়তা দিলে এটি দেশের অন্যতম সেরা পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠতে পারে।


shamim99/mohin

মন্তব্য  (০)

মন্তব্য করুন