খানসামায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘রেটুন ক্রপ’ পদ্ধতিতে ধান উৎপাদন

মো: আমিনুল ইসলাম : ইনফোলিডার, গোয়ালডিহি ইউডিসি, খানসামা, দিনাজপুর
প্রকাশ কাল : ২০১৮-০৭-১২ ১৩:৫৭:২৫


খানসামায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘রেটুন ক্রপ’ পদ্ধতি
খানসামায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘রেটুন ক্রপ’ পদ্ধতি

দিনাজপুরের খানসামায় কয়েক বছর ধরে ‘রেটুন ক্রপ’ পদ্ধতিতে ধান উৎপাদন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ পদ্ধতিতে ধান উৎপাদন হচ্ছে। চাষিরা ইরি-বোরো কাটার পর জমিতে পড়ে থাকা ধান গাছের নাড়া (ধান গাছের গোড়া বা মুড়া) থেকে এ পদ্ধতিতে পুনরায় ধান উৎপাদন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার গোয়ালডিহি, কাচিনীয়া, দুবলিয়া, পাকেরহাট, আঙ্গারপাড়াসহ বেশকিছু গ্রামে চাষিরা চলতি বছর রেটুন ক্রপ করেছেন। এর মধ্যে গোয়ালডিহি এছারপাড়ার কৃষক মফিজ আলী চলতি বছর ইরি-বোরো মৌসুমে পার্শ্ববর্তী বড় দোলার দুই বিঘার একটি জমিতে ব্রি ধান-২৮ চাষ করেন। তিনি মে মাসের শুরুতে এসব ধান কেটে ঘরে তোলেন। আবহাওয়াজনিত কারণে চলতি বছর ধান একটু কম হয়েছে। কিন্তু তিনি জমিতে পড়ে থাকা ধান গাছের নাড়া নষ্ট না করে ‘রেটুন ক্রপ’ পদ্ধতিতে পুনরায় ধান উৎপাদন করতে সেগুলোর যত্ন নেন। এতে কোন প্রকার সেচ ছাড়াই শুধু স্বল্প পরিচর্যায় ধানের মাঝারি ফলন পেয়েছেন। তিনি ‘রেটুন ক্রপ’ করে দুই বিঘা জমিতে ধান পেয়েছেন প্রায় ১৪ মণের মতো। এছাড়াও ওই এলাকার অনেকেই পড়ে থাকা জমিতে ‘রেটুন ক্রপ’ করে বাড়তি ফসল উৎপাদন করছেন। এদের মধ্যে এছারপাড়ার ইউনুস আলী ৮ মণ, অব্দুস সামাদ ৬ মণ, মন্ডল তেলি ৬ মণ, সালেহা বেগম ২ মণ এবং ছেড়া মুন্সিপাড়ার সাহিদুল ৪ মণ ধান উৎপাদন করেছেন। কৃষক মফিজ আলী বলেন, আমি কয় বছর থেকে শুনি ধান গাছের মুড়ার ফের ধান হয়। এইবার নিজে আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে।

অপরদিকে, ‘রেটুন ক্রপ’ পদ্ধতিতে কাচিনীয়া গ্রামের শামীম হোসেন ১২ মণ, রবিউল ইসলম ৪ মণ এবং অবিনাশ চন্দ্র ৫ মণ, নলবাড়ী গ্রামের বর্গাচাষী আবুল কালাম আজাদ ৪ মণ, মহির উদ্দিন ২ মণ এবং ফয়জার রহমান ২ মণ, পাকেরহাট গ্রামের দুলাল চন্দ্র ১০ মণ, তপন চন্দ্র ও সুকারু চন্দ্র ৮ মণ ধান উৎপাদন করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে শাহীনুর আলম ২৫ শতক জমিতে ‘রেটুন ক্রপ’ পদ্ধতিতে ধান চাষের সুচনা করে এলাকায় ব্যাপক আলোচিত হন। যার ধারাবাহিকতায় বর্তমানে এলাকার অন্যান্য কৃষকগণও ‘রেটুন ক্রপ’ করে বাড়তি ফসল উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার আফজাল হোসেন বলেন, এটিকে ‘রেটুন ক্রপ’ বলা হয়। বিশেষ করে ব্রি ধান-২৮ ও ২৯ এ পদ্ধতিতে ধান চাষ করা যায়। এসব ধানের গোড়া কাঁচা থাকে। এ বছর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের অনেক কৃষক ‘রেটুন ক্রপ’ করছেন।‘রেটুন ক্রপ’ পদ্ধতিতে স্বল্প পরিচর্যায় ধান উৎপাদন করা যায়। এতে কৃষকেরা বাড়তি আয় করতে পারেন।


aminulkhansama/mohin

মন্তব্য  (০)

মন্তব্য করুন