Logo

‘গ্রামের হাটে’ বিক্রি হচ্ছে বিষমুক্ত আম

mohin , || প্রকাশ কাল : 2018-05-21 14:56:21


তথ্যজানালা অনলাইন ডেস্ক
বিশ শতকের শেষের দিকে উন্নত দেশগুলোতে ডিজিটাল বিপ্লব শুরু হলেও একুশ শতকে এসে তা উন্নয়নশীল অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তির বিস্ময়কর সম্প্রসারণ সারাবিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আধুনিকতা ও নতুন মাত্রা নিয়ে এসেছে- যা ই-কমার্স নামে পরিচিত। ইলেক্ট্রনিক নেটওয়ার্ক, বিশেষ করে, ইন্টারেনট ব্যবহার করে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়, অর্থ লেনদেন ও ডাটা আদান-প্রদানই হচ্ছে ই-কমার্স বা ই-বাণিজ্য। ই-মেইল, ফ্যাক্স, অনলাইন ক্যাটালগ, ইলেক্ট্রনিক ডাটা ইন্টারচেঞ্জ (ইডিআই), ওয়েব বা অনলাইন সার্ভিসেস ইত্যাদির মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অভিযাত্রায় তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তির সুবিধা শহর ও গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় ই-কমার্স সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ই-কমার্স সাইটে অনলাইনে কেনাকাটার বিষয়টি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কর্মরত উদ্যোক্তরা নেমেছেন ই-কমার্স বাণিজ্যে। এক্ষেত্রে তাদের প্রেরণা জুগিয়েছে সম্প্রতি শেষ হওয়া সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ‘তৃণমূলের তথ্যজানালা’ প্রশিক্ষণ। উদ্যোক্তারা এই প্রশিক্ষণ থেকে ই-কমার্স এর ওপর ধারণা নিয়ে নিজেরাই তৈরি করেছে ‘গ্রামের হাট’ নামে একটি ওয়েবসাইট। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গুণগত মানের পণ্য ক্রেতার সামনে তুলে ধরছেন। এখান থেকে ক্রেতারা তাদের পছন্দের পণ্য ক্রয় করতে পারছেন। বর্তমানে ‘গ্রামের হাট’ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উৎপাদিত ফরমালিনমুক্ত বিখ্যাত আম বিক্রির জন্য অর্ডার গ্রহণ করা হচ্ছে।
ছয় ঋতুর বাংলাদেশে গ্রীষ্ম হলো ফলের ঋতু। আর এ ঋতুর মাস হলো বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ। জ্যৈষ্ঠ মাস আবার মধুমাস নামেই খ্যাত বাঙালির মুখে মুখে। মধুমাসে সব ফলের রাজাফল হলো আম। জাতীয় ফল কাঁঠাল হলেও আম হচ্ছে রসনার ফল। আমের নানান জাতের মধ্যে কিছু আম জ্যৈষ্ঠ মাসেই মন ভরিয়ে দেয় ফলরসিকদের। মধু মাসের এ আমের রয়েছে নানা জাত। নানা পদ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আর রাজশাহীর যে আম সিডিউল মতো এখন পাওয়া যাবে তা হলো গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, ফজলি ও আশ্বিনা।
‘গ্রামের হাট’ ই-কমার্সের সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছেন তারা সবাই স্থানীয় সমন্বয়ক। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন- যশোরের আরবপুর ইউডিসির উদ্যোক্তা এস এম আরিফুজ্জামান, রাজশাহীর হুজুরীপাড়া ইউডিসির উদ্যোক্তা জিয়াউল হক, টাঙ্গাইলের দেউলী ইউডিসির উদ্যোক্তা আকলিমা আক্তার লিমা, ঢাকার সাভারের ইউডিসি উদ্যোক্তা আজিজুল হাকিম, ফরিদপুরের উদ্যোক্তা রোকসানা পারভীন নীরা, বগুড়ার উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর হোসেন, জয়পুরহাটের উদ্যোক্তা মোতারফ হোসেন জুয়েল প্রমুখ।
‘গ্রামের হাট’ ই-কমার্স সাইটে আম বিক্রি নিয়ে কথা হয় যশোরের আরবপুর ইউডিসির উদ্যোক্তা এস এম আরিফুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি জানান, আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিখ্যাত জিনিসগুলো কোনো প্রকার নকল-ভেজাল ছাড়াই ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতে পারছি। এ জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইউডিসি উদ্যোক্তরা কাজ করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার আমরা ফরমালিন বা কেমিক্যালমুক্ত আম বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সুস্বাদু মিষ্টি আম খেতে কার না ইচ্ছে করে। কিন্তু সে আম যদি হয় রাজশাহী বা চাঁপাইনবাবগঞ্জের, তাহলেতো কথাই কথাই নেই। অনেকে আম খান কিন্তু আমের প্রকৃত নাম জানেন না। আবার অনেকে নাম জানলেও দেখতে কেমন সেটা জানেন না। ফলে আম বিক্রেতা যা ধরিয়ে দেয় তা নিয়েই বাড়ি ফেরেন ক্রেতা। অনেক সময় দোকানি বলে দেয় আম মিষ্টি হবে, কিন্তু খাবার সময় আর মুখে তোলা যায় না। আমরা চেষ্টা করছি কিছু জনপ্রিয় ও দুর্লভ আম কোনো কেমিক্যাল ছাড়াই ক্রেতার হাতে পৌঁছে দিতে।
রাজশাহীর হুজুরীপাড়া ইউডিসির উদ্যোক্তা জিয়াউল হক জানান, গ্রামের হাট গত বছর সারাদেশে ২ হাজার ৫০০ মণ আম বিক্রি করেছে। এর মূল্য ছিল তখনকার বাজার অনুযায়ী প্রায় ৫০ লাখ টাকা। আমরা লাভ করি খুবই সামান্য। তাই দেড় লাখ টাকার মতো লাভ হয়েছিল। এবার আমের ফলন ভালো। ক্রেতাদের এবার আরও সুলভ মূল্যে আম দিতে পারব। শুধু অর্ডার পেলেই আমরা ঠিকানামতো আম পৌঁছে দেবো।
কিভাবে পাওয়া যাবে আম : আম নিতে হলে গ্রামের হাট ওয়েবসাইট (http://www.gramerhat.com/) অথবা ফোনের মাধ্যমে অর্ডার করতে হবে। যেখান থেকে আপনার নিতে সুবিধা হয় সেই জায়গার নাম-ঠিকানা ভালো করে জানিয়ে দিতে হবে। তাহলেই সময় মতো আপনার আম পৌঁছে যাবে। এর জন্য স্থানীয় বাজার দরেই আপনি বিষমুক্ত আম পাবেন। শুধু পরিবহণ খরচ যোগ হবে। তবে কুরিয়ার সার্ভিসের জন্য এ নিয়ম প্রযোজ্য। যদি নিজস্ব ব্যবস্থায় আনতে পারেন তাহলে পরিবহন খরচ বেচে যাবে।
যাদের কাছে অর্ডার করা যাবে অথবা সব বিষয়ের সঠিক খবর জানা যাবে তারা হলেন- যশোরের এস এম আরিফুজ্জামান (০১৭১৩২৫৫১৪২), রাজশাহীর জিয়াউল হক (০১৭২৪৪৫০৪১৮), টাঙ্গাইলের আকলিমা আক্তার লিমা (০১৭৪০০১৬৪৭৮) ও ঢাকার আজিজুল হাকিম (০১৮৩০৩০৭২৯৮)।

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি
Developed by